মাগরিবের নামাজের পর নফল নামাজ
মাগরিবের নামাজের পর নফল নামাজ কয় রাকাত পড়তে হবে? এই বিষয়ে আমরা অনেকেই জানিনা। যদিও নফল নামাজ না পড়লে কোনরকম গুনাহ হয় না। কিন্তু নফল নামাজ পড়লে অনেক সওয়াব হয়। যেহেতু মাগরিবের নামাজের পরে নফল নামাজ রয়েছে তাই মাগরিবের নামাজের পর নফল নামাজ সম্পর্কে আমাদের অবশ্যই জানতে হবে। জানতে হবে মাগরিবের নামাজের পর নফল নামাজ কয় রাকাত?
আপনি যদি মাগরিবের নামাজের পর নফল নামাজ সম্পর্কে জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেল জুড়ে আমাদের সঙ্গে থাকুন। তাহলে চলুন দেরি না করে মাগরিবের নামাজের পর নফল নামাজ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
পেজ সূচিপত্রঃ মাগরিবের নামাজের পর নফল নামাজ
- মাগরিবের নামাজের পর নফল নামাজ
- মাগরিবের নামাজ কত রাকাত
- মাগরিবের নামাজের পর আমল
- মাগরিবের নামাজের আগে
- শেষ কথা
মাগরিবের নামাজের পর নফল নামাজ
মাগরিবের নামাজের পরে নফল নামাজে রয়েছে আমরা অনেকেই মাগরিবের নামাজের পর নফল নামাজ পড়ি আবার অনেকেই পড়িনা। সাধারণত যারা মাগরিবের নামাজের পরে নফল নামাজ আদায় করে না তারা সওয়াব এর থেকে বঞ্চিত হয়ে যায়। তাই আমাদেরকে অবশ্যই মাগরিবের নামাজের পর নফল নামাজ সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে।
আরো পড়ুনঃ মসজিদে প্রবেশের দোয়া ও মসজিদ থেকে বের হওয়ার দোয়া
মাগরিবের আজান ও ইকামতের মধ্যে সুন্নাত বা মুস্তাহাব পর্যায়ের কোন নামাজের প্রয়োজন নেই। কারণ এই সময় আল্লাহর রাসূল সাঃ কোন নামাজ পড়েছেন এরকম স্পষ্ট বর্ণনা নেই। খোলাফায়ে রাশেদীন এই সময় কোন নামাজ পড়তেন না। অন্যান্য সাহাবায়ে কেরাম ও মাগরিবের আজান এবং ইকামতের মধ্যে কোন নামাজ পড়তেন না।
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন মাগরিব ও এশার মধ্যবর্তী সময়ে নামাজী ব্যক্তির যে নামাজ পড়ে একে সালাতুল আওয়াবিন বলে। আম্মার ইবনে ইয়াসিন রাঃ থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেছেন, মাগরিবের নামাজের পরে যে ব্যক্তি ছয় রাকাত নফল নামাজ পড়বে তার গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে, যদিও তা সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হয়। {মাজমাউজ জাওয়াইদঃ ৩৩৮০}
সালেম রহঃ তার পিতা আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণনা করেন, নবীজি সাঃ বলেছেন, ' যে ব্যক্তি মাগরিবের পর ছয় রাকাত নামাজ পড়বে তার ৫০ বছর এর গুনাহ মাফ হয়ে যাবে।'{নাইলুল আওতারঃ ৩/৫৫} তাহলে আমরা এই হাদিস থেকে জানতে পারি যে মাগরিবের নামাজের পরে ছয় রাকাত নফল নামাজ পড়ার গুরুত্ব কত বেশি।
মাগরিবের নামাজ কত রাকাত
মুসলিমদের অবশ্য পালনীয় দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে অন্যতম হলো মাগরিবের নামাজ। ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে নামাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত। প্রথমে ঈমান আনা এরপরে নামাজের অবস্থান। দৈনিক আমাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে হয় এর মধ্যে মাগরিবের নামাজ হলো চতুর্থতম। এই নামাজ সূর্যাস্তের পর আদায় করতে হয়।
আমরা অনেকেই সঠিকভাবে জানিনা মাগরিবের নামাজ কত রাকাত? এছাড়া মাগরিবের নামাজের পর নফল নামাজ পড়তে হয় কিনা? এই বিষয়েও আমাদের কোন ধারণা নেই। মাগরিবের নামাজ হচ্ছে মোট সাত রাকাত। তিন রাকাত ফরজ, দুই রাকাত সুন্নত এবং দুই রাকাত নফল।
মাগরিবের নামাজের পর আমল
আমরা যত বেশি আমল করব সেটা আমাদের জন্যই ভালো। আমলগুলো আমাদের আমলনামায় লেখা হবে। আমরা দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করি তার মধ্যে মাগরিবের নামাজ একটি। অনেকে মাগরিবের নামাজের পর আমল করতে চাই কিন্তু জানে না মাগরিবের নামাজের পর আমল কি করবে?
১। আস্তাগফিরুল্লহ্,
বাংলা অর্থঃ আমি আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি। ৩ বার পড়তে হবে।
২। বাংলা উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা আন্তাস সালা-মু অমিন্কাস সালা-মু তাবা-রকতা ইয়া যাল জালা-লি ওয়াল ইকর-ম।
অর্থ- হে আল্লাহ! তুমি শান্তি (সকল ত্রুটি থেকে পবিত্র) এবং তোমার নিকট থেকেই শান্তি। তুমি বরকতময় হে মহিমময়, মহানুভব! {মুসলিম ১/৪১৪}
৩। বাংলা উচ্চারণঃ লা ইলাহা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু লা শারীকা লাহ্, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুলহা’মদু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাই ইন ক্বদীর।
বাংলা অর্থঃ আল্লাহ ব্যতীত কোন সত্য মাবুদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন অংশী নেই, তাঁরই জন্য সমস্ত রাজত্ব, তাঁরই সমস্ত প্রশংসা এবং তিনি সর্ব বিষয়ে শক্তিমান।
আরো পড়ুনঃ রমজানের গুরুত্বপূর্ণ ৮ টি ইবাদাত - রোজার ইবাদতের ফজিলত
৪। বাংলা উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা লা মা-নি’আ লিমা আ’ত্বইতা, ওয়ালা মু’তিয়া লিমা মানা’তা ওয়ালা ইয়ানফা’উ যাল জাদ্দি মিনকাল জাদ্দু।
বাংলা অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমি যা দান কর তা রোধ করার এবং যা রোধ কর তা দান করার সাধ্য কারো নেই। আর ধনবানের ধন তোমার আযাব থেকে মুক্তি পেতে কোন উপকারে আসবে না। {বুখারী, মুসলিম, সহীহ , মিশকাত ৯৬২ নং}
৫। বাংলা উচ্চারণঃ লা-হাওলা ওয়ালা ক্বুউওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ্।
বাংলা অর্থঃ আল্লাহর প্রেরণা দান ছাড়া পাপ থেকে ফিরার এবং সৎকাজ করার শক্তি নেই।
মাগরিবের নামাজের আগে
মাগরিবের নামাজের আগে আমরা কি করতে পারি এ বিষয়ে সম্পর্কে অনেকেই জানতে চায়? মাগরিবের নামাজের আগে কোন সুন্নত বা নফল নামাজ আছে কিনা অবশ্যই আমাদের এ বিষয়ে সম্পর্কে জানতে হবে। কারণ নামাজ হচ্ছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত। মাগরিবের নামাজের আগে আমরা কি করতে পারি বিষয়গুলো জেনে নেওয়া যাক।
আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাঃ কে মাগরিবের ফরজের পূর্বে দুই রাকাত নামাজ পড়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, " আমি আল্লাহর রাসূল সাঃ এর যুগে কাউকে উক্ত নামাজ পড়তে দেখিনি।"{ শুনানে আবু দাউদঃ ১২৮৭} সাঈদ ইবনুল মুসায়িব রাঃ বর্ণনা করেন তিনি বলেন, "মুহাজিদ সাহাবীগণ মাগরিবের আগে দুই রাকাত নামাজ পড়তেন না আর আনসার সাহাবীগণ তা পড়তেন।"
ইব্রাহিম নাখায়ি রাঃ বলেন, " আবু বক্কর ওমর ও উসমান রাঃ মাগরিবের পূর্বে দুই রাকাত নামাজ পড়তেন না।"{মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাকঃ ৩৯৮৫} হাম্মাদ বিন আবি সুলাইমান রহঃ বলেন, আমি ইব্রাহিম নাখায়ি রহঃ কে মাগরিবের পূর্বে নফল নামাজ পড়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি আমাকে তা পড়তে নিষেধ করলেন এবং বললেন রাসুলুল্লাহ সাঃ, আবু বকর, উমর রাঃ, উসমান রাঃ কেউ এই নামাজ পড়তেন না।{ কিতাবুল আছারঃ ১/১৬৩}
আরো পড়ুনঃ রমজানের প্রথম ১০ দিনের আমল - রমজানের প্রথম দশ দিনের দোয়া
যেহেতু খোলাফায়ে রাশেদীন সহ অন্যান্য সাহাবারা এই সময় নফল নামাজ পড়েননি এবং মাগরিবের নামাজের আগে নফল নামাজের কোন রকমের বিশেষ ফজিলত এর কথা হাদিসে বর্ণনা করা নেই। এবং হাদিসে এসেছে মাগরিবের নামাজ আজান দেওয়ার সাথে সাথে বিলম্ব না করে তাড়াতাড়ি শুরু করার কথা। তার মাগরিবের নামাজের আগে নফল নামাজ পড়া উচিত নয়।
মাগরিবের নামাজের পর নফল নামাজঃ শেষ কথা
মাগরিবের নামাজের পর নফল নামাজ, মাগরিবের নামাজের আগে, মাগরিবের নামাজের পর আমল, মাগরিবের নামাজ কয় রাকাত? এই বিষয়গুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। প্রিয় পার্থক্য না আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। মুসলিমের জন্য এ বিষয়টি জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। আমাদের এই ওয়েবসাইটের নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল পাবলিশ করা হয়। ১৬৮৩০
Articulate Avenue privacy Policy; check your comments
comment url