ভিসার আবেদন করতে কি কি লাগে?


ভিসার আবেদন করতে কি কি লাগে?

আপনি কোন কাজে পৃথিবীর যেকোনো দেশে প্রবেশ করতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে ভিসা করতে হবে। বর্তমানে আমরা বিভিন্ন কাজ যেমন শিক্ষা চিকিৎসা বিনোদন বা কাজের উদ্দেশ্যে দেশের বাইরে যেয়ে থাকি। আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন ভিসা পাসপোর্ট ছাড়া দেশের বাইরে যাওয়া যায় না।



আজকের ব্লগটিতে ২০২৪ সালে বাংলাদেশ থেকে যে কোন দেশের ভিসার জন্য কিভাবে আবেদন করবেন আবেদনের যোগ্যতা এবং কি কি কাগজপত্র লাগবে সে সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। তাই আপনি যদি প্রবাসে যাওয়ার চিন্তা করে থাকেন তাহলে আজকের ব্লগটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন সে ক্ষেত্রে আপনার ভিসা এবং পাসপোর্ট সম্পর্কিত যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।

চলুন প্রথমে জেনে নেয়া যাক ক্ষেত্রে কি কি কাগজপত্রের প্রয়োজন হয় সে সম্পর্কে।

ভিসা আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

  • আপনার একটি বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে
  • পাসপোর্ট এর মেয়াদ সর্বনিম্ন ৬ মাস থাকতে হবে
  • আপনার এনআইডি কার্ড প্রয়োজন হবে
  • এন আই ডি কার্ড এবং জন্ম নিবন্ধন এর সকল তথ্য মিল থাকতে হবে বিশেষ করে জন্ম তারিখ, বাবা মায়ের নাম নিজের নাম ইত্যাদি।
  • যে ভিসার জন্য আবেদন করবেন সে ভিসার আবেদন ফরম
  • আপনারব্যাংক স্টেটমেন্ট
  • যে ভিসার জন্য আবেদন করবেন সে ভিসার জন্য নির্ধারিত ফি
  • নিয়োগকর্তা থেকে ইনভাইটেশন লেটার
  • বিশেষ ক্ষেত্রে আপনার সম্পত্তি এবং জমি জমার বিবরণী
সাধারণত উপরোক্ত কাগজপত্র গুলোর মাধ্যমে আপনি সমস্ত প্রকার ভিসার আবেদন করতে পারবেন। তবে বিশেষ কিছু ভিসার ক্ষেত্রে কিছু অতিরিক্ত কাগজপত্রের প্রয়োজন হতে পারে যেটি নির্ধারণ করবে আপনি কোন ভিসা এবং কোন দেশে যাবেন তার উপরে। তাই আপনি যে দেশে যেতে চান সে দেশের দূতাবাস বা অন্যান্য কোন মাধ্যম থেকে কি কি কাগজপত্রের প্রয়োজন হবে সেটা জেনে নিন।

এবার চলুন জেনে নেয়া যাক সমস্ত প্রকার ভিসার জন্য জনপ্রিয় মাধ্যম অনলাইন মাধ্যম সম্পর্কে।

অনলাইনে ভিসার জন্য কিভাবে আবেদন করবেন?

বর্তমানে আমরা যেকোনো কাজের ক্ষেত্রে অনলাইন মাধ্যমকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকি ভিসার আবেদনের ক্ষেত্রেও তার বিকল্প নয়। আপনি চাইলে খুব সহজে নিজেই নিজের স্মার্টফোন বা ডেস্কটপ এর সাহায্যে সহজেই অনলাইন এর মাধ্যমে ভিসার আবেদন করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমেই বাংলাদেশের সরকারি ভিসা আবেদনের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। এই ওয়েবসাইট থেকে আপনি সমস্ত প্রকার ভিসার তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এবং আবেদন করতে পারবেন।

ভিসা সম্পর্কে যদি আপনি বেশি কিছু না জেনে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনি আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করে সেখান থেকে ভিসাউক পাসপোর্ট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারেন। অথবা আপনি যে দেশে যেতে যাচ্ছেন সে দেশের ভিসা সম্পর্কে গুগলে বা youtube এ সার্চ করে বিস্তারিত জেনে এরপরে সেই দেশের অফিসিয়াল ভিসা আবেদনের ওয়েবসাইট থেকে আবেদন করতে পারেন। ।

তবে বর্তমানে বাংলাদেশের অনেকে দালাল বা অন্যান্য এজেন্সির সহায়তা নিয়ে থাকে ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে। বের করা বর্তমান সময়ে অনেক কঠিন একটা কাজ। বাংলাদেশ বর্তমানে বিপুল পরিমাণে মানুষ ভিসা আবেদনের টাকা দালালের কাছে দিয়ে প্রতারিত হচ্ছে। দালালের মাধ্যমে ভিসার আবেদন করার অনেক জটিলতা রয়েছে। তাই ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে কোন সরকারি এজেন্সির সহায়তা নেয়া বুদ্ধিমানের কাজ এক্ষেত্রে প্রতারিত হওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকবে না। ।

অনলাইনে ভিসা আবেদনের ফর্ম

আমাদের দেশের অনেকে যখন ভিসার জন্য আবেদন করতে চান তখন কোন কিছু না ভেবেই দালাল বা এজেন্সির কাছে ভিসা আবেদনের জন্য টাকা জমা দিয়ে থাকেন সে ক্ষেত্রে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় সহ প্রসেসিং এ অনেক সময় লেগে যায়। কিন্তু আপনি চাইলে খরচ কমানোর জন্য অথবা নিরাপত্তার জন্য নিজেই অনলাইন থেকে ভিসা আবেদনের ফরম পূরণ করে কাঙ্খিত ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন।

অনলাইনে ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমেই আপনি যে দেশের ভিসার জন্য আবেদন করতে চাচ্ছেন সেই দেশের অফিসিয়াল ভিসা ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে একটি একাউন্ট খুলে নিতে হবে। ধরুন আপনি মালয়েশিয়ার ভাষার জন্য আবেদন করতে চাচ্ছেন সে ক্ষেত্রে আপনাকে মালয়েশিয়ার অফিসিয়াল ভিসা আবেদনের ওয়েবসাইটে গিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলে আপনার পছন্দের ভিসাটি সিলেক্ট করে সেখান থেকে আবেদন ডাউনলোড করে পূরণ করে তার সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র মালয়েশিয়ার দূতাবাসে জমা দিয়ে ভিসার জন্য আবেদন সম্পন্ন করতে পারেন। আশা করি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।

আমাদের মধ্যে অনেকে প্রশ্ন করে থাকে দালাল ছাড়া সরকারিভাবে কোনভাবে কি বিদেশে যাওয়া যায়? উত্তর হলো যায়। চলুন এবার জেনে নেয়া যাক কিভাবে সরকারি ভাবে দালাল ছাড়া বিদেশে যাবেন।

দালাল ছাড়া সরকারিভাবে বিদেশে যাওয়ার উপায়

কোন প্রকার দালাল বা এজেন্সির সাহায্য ছাড়া আপনি যদি বিদেশে যেতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে বাংলাদেশের একটি সরকারি অ্যাপস ডাউনলোড করতে হবে প্লে স্টোর থেকে। অ্যাপটির নাম হচ্ছে আমি প্রবাসী। প্লেস্টোরে ঢুকে আমি প্রবাসী লিখে সার্চ করলে অ্যাপটি সামনে চলে আসবে। সিম্পলি আপনি অ্যাপটি আপনার ফোনে ইন্সটল করে একাউন্ট খুলে বিভিন্ন দেশের ভিসা সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং স্বল্প খরচে পৃথিবীর সমস্ত দেশে যে কোন ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

এবার চলুন জেনে নেয়া যাক আমি প্রবাসী অ্যাপের মাধ্যমে কিভাবে কোন দেশের ভিসার জন্য আবেদন করবেন।

আমি প্রবাসী অ্যাপ এর মাধ্যমে ভিসার জন্য আবেদন

প্রথমে আপনি ইন্সটল করে আপনার যাবতীয় তথ্য সেখানে দিয়ে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে।
তারপর অ্যাপের নির্দেশনা অনুযায়ী আপনি যে দেশের ভিসার জন্য আবেদন করতে চান সেটি বাছাই করুন। এবং কোন ধরনের ভিসার জন্য আবেদন করতে চান সেটিও বাছাই করুন।

আপনার পছন্দের ভিসা বাছাই করার পর কর্তৃপক্ষ আপনাকে মৌখিক ভাইবার জন্য ডাকবে আপনি যদি সেই ভিসার যোগ্য হন সে ক্ষেত্রে আপনাকে ভিসাটি দিয়ে দেয়া হবে।

আপনাদেরকে আরেকটি বিষয় জানিয়ে রাখি আমি প্রবাসী অ্যাপটি বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ডেভলপ করা হয়েছে তাই এখানে প্রতারিত হবার কোন সুযোগ নেই এবং আপনি শতভাগ নিরাপদে এবং কম খরচে যে কোন ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন এক্ষেত্রে আপনাকে কোন প্রকার দালাল বা এজেন্সির সাহায্য নিতে হবে না।

ভিসা করতে বর্তমানে কত টাকা লাগে?

যে কোন ভিসার জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই খরচের বিষয়টা আগে চিন্তা করতে হবে। আপনি যদি খরচ সম্পর্কে আইডিয়া না রাখেন সে ক্ষেত্রে প্রতারিত হবার সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যায় তাই নির্ভরযোগ্য সোর্স থেকে ভিসার জন্য যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করুন এবং খরচ সম্পর্কে খুব ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করে নিন।

বিভিন্ন প্রকার ভিসার জন্য বিভিন্ন রকম টাকা খরচ হয়ে থাকে অর্থাৎ ভিসার খরচ এর প্রকারভেদ এর উপরে নির্ভর করে। যেমন আপনি যদি ওয়ার্কার ভিসায় কোন দেশে যেতে চান সে ক্ষেত্রে একরকম খরচ হবে অন্যদিকে আপনি যদি স্টুডেন্ট ভিসায় বা টুরিস্ট ভিসায় কোন দেশে যেতে চান সেক্ষেত্রে খরচ ভিন্ন হবে।

এছাড়াও আপনি কোন মাধ্যমে ভিসার জন্য আবেদন করেছেন অর্থাৎ দালাল বা কোন এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করলে খরচ সাধারণত বেশি হয়ে থাকে অন্যদিকে আপনি যদি কোন সরকারি মাধ্যমে আবেদন করেন সেক্ষেত্রে খরচ অনেক আংশিক কমে আসতে পারে। তাই সবসময় চেষ্টা করুন সরকারি মাধ্যমে ভিসার আবেদন করার কোন প্রকার দালাল বা এজেন্সি সহায়তা নেয়ার প্রয়োজন নেই।

ভিসা পেতে সাধারণত কতদিন সময় লাগে?

ভিসা পেতে কত সময় লাগবে এটাও নির্ভর করে আপনি কোন মাধ্যমে ভিসার জন্য আবেদন করেছেন। এছাড়াও আপনি কোন দেশের ভিসার জন্য আবেদন করেছেন সেই দেশের সার্বিক পরিস্থিতির ওপরেও ভিসা প্রক্রিয়াকরণের সময়ে নির্ভর করে থাকে। তবে স্বাভাবিকভাবে কোন দেশে ভিসা পেতে কতদিন সময় লাগে সেটি নিচে আলোচনা করা হলো।
  • দুবাইয়ের ভিসা পেতে সাধারণত পাঁচ থেকে সাত দিন সময় লাগে
  • উজবেকিস্তানের টুরিস্ট ভিসা পেতে ঐরকম পাশ থেকে সাত দিন সময় লাগতে পারে
  • মিশরের ভিসা পেতে দশ দিন থেকে ২১ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে
  • সিঙ্গাপুরের টুরিস্ট ভিসা পেতে 15 দিন থেকে এক মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে
  • ইন্ডিয়ার টুরিস্ট ভিসা পেতে এক থেকে তিন সপ্তাহ সময় লাগতে পারে
  • থাইল্যান্ডের টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করার পর 5 থেকে 10 দিন সময় লাগে
  • তুর্কির টুরিস্ট ভিসা পেতেও দশ দিন থেকে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে
  • এছাড়াও জার্মানির ভিসা পেতে ৬ থেকে ৮ মাস মালয়েশিয়ার ভিসা পেতে তিন থেকে চার মাস সময় লাগতে পারে।

শেষ কথা

উপরের আলোচনা থেকে আশা করি ভিসা সম্পর্কে মোটামুটি একটা স্বচ্ছ ধারণা পেয়েছেন। সহজভাবে সরকারি বেসরকারি বা যেকোনো মাধ্যমে বিদেশে যাবার ক্ষেত্রে ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে আর কোন প্রশ্ন থাকার কথা না। এছাড়াও আমার আলোচনার বাইরে যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে কমেন্ট বক্সে আপনার প্রশ্নটি করুন যথাসম্ভব উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব।
বিভিন্ন দেশের ভিসা ও পাসপোর্ট সম্পর্কে আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত কনটেন্ট পাবলিশ করা হয়। ভিসা সম্পর্কিত যে কোন প্রশ্ন এবং উত্তর খুঁজে পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে ভুলবেন না। আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ভিসা এবং পাসপোর্ট সম্পর্কিত আরো বিভিন্ন তথ্যের জন্য এখানে চাপুন।

Share This Post

Next Post Next Post
No Comments
Click Here For Post A comment

Articulate Avenue privacy Policy; check your comments

comment url