অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা ফর বাংলাদেশি


অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা ফর বাংলাদেশি

অভিবাসীদের চাহিদা বিবেচনায় বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া পড়াশোনার কাজ ঘোরাফেরা চিকিৎসা বা অন্যান্য ক্ষেত্রে বর্তমান সময়ে অনেক জনপ্রিয়। বাংলাদেশ এবং পৃথিবীর অন্যান্য দেশ থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ অস্ট্রেলিয়ায় বিভিন্ন বিষয় গমন করে থাকে। তাই আপনিও যদি আপনার স্বপ্ন পূরণ এর উদ্দেশ্যে অস্ট্রেলিয়া থেকে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই অস্ট্রেলিয়া ভিসার আবেদন যোগ্যতা আবেদন করতে কি কি ডকুমেন্টের প্রয়োজন এবং কত টাকা খরচ হয় সেটা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা উচিত।


আমরা সকলেই জানি দেশের বাইরে যে কোন দেশে যেতে ভিসা এবং পাসপোর্ট এর প্রয়োজন হয়। তাই আজকের আর্টিকেলে অস্ট্রেলিয়ার ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি, ব্লকটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন তাহলে অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

প্রথমে জেনে নেয়া যাক অস্ট্রেলিয়ায় কি কি ভিসা পাওয়া যাবে বাংলাদেশ থেকে। 

অস্ট্রেলিয়ায় কি কি ভিসা পাওয়া যায়?

আমাদের মধ্যে অনেকেই মনে করে থাকেন অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশের জন্য কোন ভিসা নেই। কারণ অস্ট্রেলিয়া অনেক উন্নতিদের তাই এখানকার ভিসা পাওয়া অনেক কঠিন বা অসম্ভব বলে অনেকে মনে করেন। তবে বাংলাদেশীদের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার খুব বেশি ভিসা না থাকলেও চার ধরনের ভিসার প্রচলন রয়েছে তা হলোঃ
  • মেডিকেল ভিসা
  • টুরিস্ট ভিসা
  • স্টুডেন্ট ভিসা এবং
  • কাজের ভিসা
ব্লগের নিচের অংশে অস্ট্রেলিয়ার কাজ বা জবের ভিসার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা আছে।

অস্ট্রেলিয়া ভিসা ফর বাংলাদেশী

আপনি যে কোন উদ্দেশ্য যদি দেশের বাইরে যেতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই ভিসা এবং পাসপোর্ট এর প্রয়োজন হবে এ কথা আগেও বলেছি। যেহেতু বর্তমান সময়ে অস্ট্রেলিয়া যে কোন উদ্দেশ্যে বিদেশে গমনকারীদের জন্য অনেক জনপ্রিয় একটি অপশন তাই এদেশের ভিসা পাওয়ার জন্য প্রতিযোগিতাও অনেক বেশি সে ক্ষেত্রে আপনাকে ভিসার আবেদন এবং অন্যান্য প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা রাখতে হবে।

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে ভিসা এবং পাসপোর্ট সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকায় বিভিন্ন প্রতারক চক্রের দ্বারা প্রতারিত হন, এক্ষেত্রে যদি আপনি এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা রাখেন তাহলে আপনি নিজেই ভিসার আবেদনসহ অন্যান্য সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন ক্ষেত্রে আপনার খরচ এবং প্রতারিত হওয়া সম্ভাবনা দুইটাই কমবে। তাই এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ব্লগের নিচের অংশটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

অস্ট্রেলিয়া ভিসা ফর বাংলাদেশি স্টুডেন্টস

উচ্চ শিক্ষার জন্য সুপরিচিত দেশগুলোর মধ্যে বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া শীর্ষে রয়েছে তাই পৃথিবীর সমস্ত দেশ থেকেই প্রচুর পরিমাণে শিক্ষার্থী অস্ট্রেলিয়া উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য চেয়ে থাকেন। বাংলাদেশের স্টুডেন্টদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য যাওয়া একটি স্বপ্নের ব্যাপার। স্টুডেন্ট ভিসায় আপনি যদি উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য অস্ট্রেলিয়া যেতে চান তাহলে আপনাকে বাংলাদেশের টাকায় ৬৫০০০ থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হতে পারে। তবে এই টাকার পরিমাণ ডলার রেট বা অন্যান্য যে কোন কারনে পরিবর্তন হতে পারে।

অস্ট্রেলিয়া ভিজিট ভিসা ফর বাংলাদেশি

আপনি যদি বিনোদনের উদ্দেশ্যে বা ঘোরাঘরের উদ্দেশ্যে অস্ট্রেলিয়া যান তাহলে আপনাকে অবশ্যই অস্ট্রেলিয়ার ভিজিট ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। এছাড়াও ঘোরাঘুরি ছাড়া অন্য কোন কারণে যদি আপনি তিন মাসের কম সময়ের জন্য অস্ট্রেলিয়া যেতে চান তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনাকে ভিজিট ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। তবে ভিঞ্চির ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে আপনাকে এই বিশাল আবেদন প্রক্রিয়া এবং কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন ফ্রী কত ইত্যাদি ব্যাপারগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে।

তবে একটা খুশির সংবাদ হল ২০২৩ সাল থেকে অস্ট্রেলিয়া সরকার তাদের দেশের ভিজিট ভিসার জন্য আবেদন ফি কমিয়ে 180 অস্ট্রেলিয়ান ডলার করেছে। তাই বর্তমানে কেউ যদি অস্ট্রেলিয়ান ভিজিট ভিসার জন্য আবেদন করতে চান তাহলে আপনাকে ১৮০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার ফি প্রদান করতে হবে।

অস্ট্রেলিয়ায় ক্লিনার ভিসার আবেদন ফি কত?

আপনারা অনেকেই google বা অন্যান্য মাধ্যমে সার্চ করে জানতে চান অস্ট্রেলিয়ায় ক্লিনিং ভিসার আবেদন ফি কত তবে দুঃখজনক হলেও সত্য যে এ সম্পর্কে শতভাগ সঠিক কোন তথ্য আমরা সংগ্রহ করতে পারিনি। তবে আমাদের ধারণা অনুযায়ী আপনাকে অস্ট্রেলিয়া ক্লিনিং হিসাব পেতে হলে ১৪৫ অস্ট্রেলিয়ান ডলার খরচ করতে হতে পারে। যেহেতু এটা অনুমান নির্ভর তথ্য তাই অন্য কিছু যাচাই না করে কোন সিদ্ধান্ত নেবেন না। এক্ষেত্রে আপনি যদি অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের দপ্তরে যোগাযোগ করে সেটা সবচেয়ে ভালো হয় কারণ তারা আপনাকে আবেদন প্রক্রিয়ার খরচ এবং অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত এবং শতভাগ সঠিক তথ্য দিতে পারবেন আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ফর বাংলাদেশ

প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে পড়াশোনার পাশাপাশি বিষয়ক অনেক প্রবাসী অস্ট্রেলিয়ায় যে থাকেন। ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তাদের ক্ষেত্রে প্রয়োজন যারা অস্ট্রেলিয়া গিয়ে সেখানেই পার্মানেন্টলি থেকে যেতে চান। তবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে তার উপরে ভিত্তি করে এর ফি নির্ধারিত হয়ে থাকে, আপনি যে ধরনের ভিসার জন্য আবেদন করতে চাচ্ছেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নির্ভরযোগ্য মাধ্যম থেকে জেনে নেবেন।

অস্ট্রেলিয়ায় বিভিন্ন প্রকার ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ফি 

  • অস্ট্রেলিয়ান স্কিল্ড রিকগনাইজড গ্রাজুয়েট ভিসাঃ সাবক্লাস ফোর সেভেন সিক্স এর ভিসা ফি বাংলাদেশের টাকায় ২৭ থেকে ২৮ হাজার টাকা হতে পারে এবং যা অস্ট্রেলিয়ান ডলারে ৪১০ মত।
  • অস্ট্রেলিয়ান স্কিলড রিজিওনাল ভিসাঃ সাব ক্লাস ৮৮৭ এর ভিসা ফি বাংলাদেশি টাকায় ২৮ হাজার থেকে ২৯ হাজার টাকার মধ্যে অস্ট্রেলিয়ান ডলারে ৪২৫ ডলার।
  • অস্ট্রেলিয়ান এমপ্লয়ার নমিনেশন স্কিম ভিসাঃ সাব ক্লাস ১৮৬ এর ভিসা ফি বাংলাদেশি টাকায় একটু বেশি যার পরিমাণ ২ লক্ষ ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকার মধ্যে যার পরিমাণ হিসাব করলে প্রায় ৪ হাজার ২২৫ অস্ট্রেলিয়ান ডলার দাঁড়ায়।
  • অস্ট্রেলিয়ান রিজিওনাল স্পন্সরড মাইগ্রেশন ভিসাঃ এক্ষেত্রে সাব ক্লাস ১৮৭ এর সমপরিমাণ নির্ধারিত।
  • অস্ট্রেলিয়ান ডিক্লিয়ারটরি ভিসাঃ এক্ষেত্রে বাংলাদেশের টাকায় ১২ হাজার ৪৪০ টাকা বা অস্ট্রেলিয়ান ডলারে ১৮৫ অস্ট্রেলিয়ান ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ায় কয় ধরনের কাজের ভিসা রয়েছে?

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল একটি দেশ যেখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত সেখানে অস্ট্রেলিয়ার মত উন্নত দেশে বাংলাদেশী নাগরিকদের কর্মসংস্থানের একটি বড় সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশী নাগরিকেরা বিভিন্ন উদ্দেশ্যে অস্ট্রেলিয়া যেয়ে থাকলেও সবচেয়ে বেশি লোক কাজের উদ্দেশ্যেই সেখানে গিয়ে থাকেন।

তবে ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই আপনার নির্ধারিত ভিসা আসলেও অস্ট্রেলিয়া প্রদান করে কিনা বা বর্তমানে প্রদান করছে কিনা এ সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে এরপরে আবেদন করতে হবে নইলে বিভিন্ন দালাল চক্র আপনার এই না জানার সুযোগ নিয়ে প্রতারণা করতে পারে।

এক নজরে অস্ট্রেলিয়ার কাজের ভিসা গুলো

  • ভার্টিকালচার ভিসা
  • ক্লিনার ভিসা
  • হোটেল ভিসা
  • কৃষি কাজের ভিসা
  • মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ভিসা
  • ড্রাইভিং ভিসা
  • কনস্ট্রাকশন ভিসা
  • ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার ভিসা
  • লেবার ভিসা
  • বাবুর্চি ভিসা
  • প্যাকেজিং ভিসা
  • কোয়ালিটি ম্যানেজার ভিসা
  • ওয়েব ডিজাইন এক্সপার্ট ভীসা ইত্যাদি। 

অস্ট্রেলিয়ার কাজের ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া

অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন প্রকার ভিসা সম্পর্কে আলোচনার পর এ পর্যায়ে আমরা আলোচনা করব বিভিন্ন প্রকার ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া। সাধারণভাবে অস্ট্রেলিয়া ভিসার আবেদনের দুটি উপায় রয়েছে
১। অনলাইন মাধ্যম
২। অস্ট্রেলিয়ার দূতাবাস

আপনি চাইলে দুইটির যেকোনো একটি মাধ্যম অনুসরণ করে আপনারা আবেদন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে পারবেন। আমি আজকে অনলাইনে আবেদন করতে সম্পর্কে আলোচনা করব।

অনলাইন আবেদনের স্টেপ

প্রথমে অস্ট্রেলিয়ার ভিসার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে আপনাকে immi.homeaffairs.gov.au/visas/working-in-australia এই লিংক থেকে অস্ট্রেলিয়ার অফিসিয়াল ভিসা আবেদনের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে একটি অ্যাকাউন্ট খুলে নিতে হবে।
  • এরপর আপনি কোন ধরনের ভিসার জন্য আবেদন করতে চান সেটা নির্ধারণ করতে হবে
  • ভিসা সিলেক্ট করার পর আবেদন ফরম পূরণ করে এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সহ ফি জমা দিতে হবে।
  • এরপর আপনাকে ভিসা প্রসেসিং এর জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
এটা ছিল অনলাইনে আবেদন করার প্রক্রিয়া এখন আপনি যদি সরাসরি দূতাবাসের মাধ্যমে আবেদন করতে চান তাহলে অস্ট্রেলিয়া দূতাবাস অফিসের যোগাযোগ করে তাদের নির্দেশাবলী অনুকরণ করে অফলাইনে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
এবার চলুন জেনে নেয়া যাক অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে কি কি কাগজপত্রের প্রয়োজন হবে।

অস্ট্রেলিয়ায় কাজের ভিসা পেতে যে যে কাগজপত্র লাগে

  1. ভিসা আবেদন ফরম আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধন
  2. পুলিশ ক্লিয়ারেন্স
  3. পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  4. শিক্ষাগত যোগ্যতার সত্যায়িত সার্টিফিকেট
  5. এ কাজের ভিসার জন্য আবেদন করবেন সেই কাজের জন্য অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট
  6. মেডিকেল সার্টিফিকেট
  7. চারিত্রিক সার্টিফিকেট
  8. ইংরেজি ভাষার দক্ষতা।

অস্ট্রেলিয়ায় কাজের ভিসা পেতে কত টাকা খরচ হয়?

অস্ট্রেলিয়ায় যেতে সাধারণত কাজের ভিসার ক্ষেত্রে বাংলাদেশি টাকায় দুই থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে কিন্তু আপনি যদি কোন দালালের মাধ্যমে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন তাহলে খরচ বেড়ে ৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত যেতে পারে। কাজের ভিসার জন্য যেতে চান তাহলে শুধুমাত্র ভিসার জন্য তিন থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে এবং সর্বমোট খরচ 10 লক্ষ থেকে 12 লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে।

শেষ কথা

উপরের আলোচনা থেকে আশা করি আপনি অস্ট্রেলিয়ায় কাজের ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করি আপনাকে সঠিক তথ্য তবে আমাদের তথ্যের উপর ভিত্তি করে কোন শিক্ষিত নিবেন না অবশ্যই নিজের মতো করে যাচাই-বাছাই করে এরপর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন। আর এরকম আরো তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের হোম পেজ থেকে ভিসা ও পাসপোর্ট ক্যাটাগরি সিলেক্ট করুন এবং বিভিন্ন দেশের খরচ আবেদনের নিয়ম এবং অন্যান্য বিষয়গুলো সম্পর্কে সহজেই জেনে নিন ধন্যবাদ।

Share This Post

Next Post Next Post
1 Total Comment
  • Wasim
    Wasim ৯ জুন, ২০২৪ এ ৯:৪৭ AM

    your post is good

Click Here For Post A comment

Articulate Avenue privacy Policy; check your comments

comment url